চলতি বছর প্রথমবারের মতো নরসিংদীতে নারীর শরীরে এইচএমপিভি ভাইরাস শনাক্ত
- আপডেট সময়ঃ ০৮:১০:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৫২ বার পড়া হয়েছে।
চলতি বছর প্রথমবারের মতো কিশোরগঞ্জের এক ব্যক্তির শরীরে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) শনাক্ত হয়েছে। তিনি রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তার শারীরিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. হালিমুর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।পরবর্তীতে ৯ জানুয়ারি ওই নারীর শরীরে এইচএমপিভি শনাক্ত হয়।তবে অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ওই ব্যক্তি এইচএমপিভি’র পাশাপাশি ব্যাকটেরিয়াজনিত অন্য একটি সংক্রমণেও আক্রান্ত। তার পরিস্থিতি কিছুটা জটিল। উল্লেখ্য, ওই ব্যক্তি কিশোরগঞ্জের বাসিন্দা হলেও থাকেন নরসিংদীতে। সেখানেই ভাইরাসে আক্রান্ত হন তিনি।হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, এই ভাইরাস নতুন কিছু নয়। তবে মহামারি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাই সতর্ক দৃষ্টি আছে। এই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, আমাদের সক্ষমতার ঘাটতি আছে। তথ্য প্রকাশ করতে দ্বিধা করি। লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করি। বরং লুকিয়ে রাখলে মানুষ ভ্রান্তিতে ভোগেন। অজানা আতঙ্কে থাকেন। তিনি বলেন, এখন দেশে বহু মানুষ শ্বাসনালীর সমস্যায় আছেন। তাদের শনাক্ত করা কঠিন কিছুই না। করোনার সময় তো আমরা করেছি। এটা স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগ নিতে হবে। সার্ভিলেন্স চালু করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলে বোঝা যাবে এই রোগী কোন ভাইরাসে ভুগছেন। ভাইরাসটি নিয়ে একটু উদ্বেগের মধ্যে আছেন বলেও তিনি জানিয়েছেন।করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পাঁচ বছর পর চীনে আবারও দেখা দিয়েছে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস সংক্ষেপে এইচএমপিভি ভাইরাস।এইচএমপিভি ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
এইচএমপিভি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনের হাসপাতালগুলোতে ভিড় বাড়ছে,এমন তথ্য নাশক করে দিয়েছেন দেশটির কর্মকর্থারা।
যুক্তরাষ্টের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রেভেশন সিডিসি বলেছেন,২০০১ সালে প্রথম এই ভাইরাস শনাক্ত হয়।কিন্ত বিশেষজ্ঞরা বলেছেন,হয়তো আরো অনেক যুগ আগে থেকেই এ ভাইরাসের অস্থিতৃ ছিলো পৃথিবীতে।এই ভাইরাস ভয়াবহ আকার ধারন করবে কী না সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা কোনো সতর্কবার্তা দেননি।
চীন সরকার বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডব্লিউএইচ কেউই আনুষ্ঠানিক সতর্কতা জারি করেনি।
আক্রান্ত মানুষের হাঁচি কাশিঁ থেকে এইচএমপিভি ভাইরাস ছড়ায়।তাছাড়া বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ভাইরোলজিস্ট মাহবুবা জামিল বলেছেন।কোভিড ফুসফুসের যতটা ক্ষতিগ্রস্ত করে এইচএমপিভিতে ততটা ক্ষতি হয় না।তিনি জানিয়েছেন শিশু বয়স্ক গর্ভবতী বা কঠিন কোনো রোগে আক্রান্তদেও মধ্যে এই ভাইরাসের সংক্রমন তীব্র হতে পারে।তবে এই ভাইরাসের জন্য বর্তমানে কোনো নির্দিষ্ট অ্যান্টি ভাইরাল ঔষধ বা বিশেষ কোনো চিকিৎসা পদ্ধতি নেই।
লক্ষন:এইচএমপিভি সংক্রমিত হলে জ্বর বা ফ্লর মতো উপসর্গ দেখা যায় সাথে কাঁশি,নাক বন্ধ, শ্বাসকষ্ট এবং চামড়ায় র্যাশ বা দানা দানা দেখা দিতে পারে।
প্রতিকার ব্যাবস্থা:★বাইরে গেলে মাস্ক পরা।
★২০ সেকেন্ড ধরে সাবান-পানি দিয়ে ঘন ঘন হাত ধোয়া।
★আক্রান্তদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা,জন সমাগমস্থল এড়িয়ে চলা।
★হাত দিয়ে নাক-মুখ স্পর্শ না করা
★হাঁচি-কাশিঁ দেয়ার সময় মুখ টিস্যু দিয়ে ঢেকে নেওয়া এবং ব্যবহৃত টিস্যুটি সাথে সাথে মুখবন্ধ করা এবং ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে হাত সাবান পানিতে ধুয়ে ফেলা।
★যদি টিস্যু না থাকে তাহলে কনুই ভাঁজ করে সেখানে মুখ গুঁজে হাঁচি দেওয়া।
★রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি ও শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম করা।
★সর্দি-কাঁশি,জ্বর হলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।