০২:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫

সিলেট বিমানবন্দরে প্রকল্পের ক্ষতিপূরণ পাননি জমির মালিকেরা।

স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময়ঃ ০৪:২০:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫
  • / ১২ বার পড়া হয়েছে।

সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তাবেষ্টনী ও নিরাপত্তা টহল সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের জন্য ২০২০ সালের ডিসেম্বরে প্রায় ১৫১ একর জমি অধিগ্রহণ করতে নোটিশ দেয় কর্তৃপক্ষ। এরপর চার বছর পার হলেও এখনো ক্ষতিপূরণের টাকা বুঝে পাননি জমির মালিকেরা। অধিগ্রহণের নোটিশ জারি হওয়ায় জমি কেনাবেচা বা খাজনাও দিতে পারছেন না মালিকেরা। ক্ষতিপূরণ না পাওয়ায় তাঁরা নতুন ঠিকানায়ও যেতে পারছেন না।সদর উপজেলার বড়শালা মৌজার ধুপাগুল এলাকার রাজীব হোসেনের ১১ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু চার বছর ধরে আশ্বাস পেলেও এখনো ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি। তিনি বলেন, বর্ষায় পানি বাড়লে ঘরে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। অধিগ্রহণ হয়ে যাওয়ায় নতুন করে ঘর মেরামতও করতে পারছেন না। অধিগ্রহণের পর ঘরের ছবি ও ভিডিও নেওয়া হয়েছে। এখন নতুন করে মেরামত করলে মেরামতের টাকা বৃথা যাবে।

ক্ষতিপূরণের টাকার জন্য চার বছর ধরে সিলেট জেলা প্রশাসন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকার ধরনা দিয়েও কোনো সুরাহা পাননি বিমানবন্দর এলাকার আবদুল হাকিম (৪৮)। তিনি বলেন, তাঁরা ভুক্তভোগীরা একত্র হয়ে একাধিকবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়েছেন, বিভিন্ন কর্মসূচি করেছেন। কিন্তু কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছেন না। প্রশাসন শুধু সময় নিচ্ছে। একেকবার একেক ধরনের কথা বলছে। বিষয়টি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কাগজের জন্য আটকে আছে বলে জানাচ্ছে জেলা প্রশাসন। আবার বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে জেলা প্রশাসন বিষয়টি দেখছে।আবদুল হাকিম বলেন, অনেক ভুক্তভোগী আছেন, যাঁদের জমিগুলোই শেষসম্বল। কিন্তু চার বছরের বেশি সময় ধরে তাঁরা জমি নিয়ে কিছুই করতে পারছেন না। এতে অনেকের ঘরের জন্য ছেলেমেয়েদের বিয়েও দিতে পারছেন না।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তাবেষ্টনী ও নিরাপত্তা টহল সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের জন্য ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ১৫১ একর জায়গা অধিগ্রহণের জন্য নোটিশ জারি করে জেলা প্রশাসন। স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুমদখল আইন ২০১৭ (২০১৭ সালের ২১ নম্বর আইন)–এর ৪ ধারা অনুযায়ী এ নোটিশ জারি করা হয়। এ নোটিশ জারির প্রকল্প এলাকার কোনো জমি বেচাকেনা বন্ধ হয়ে যায়। ভুক্তভোগীদের কয়েকজন বলেন, সামনে বর্ষাকাল। তাঁদের মধ্যে যাঁদের ঘরবাড়িসহ জমি অধিগ্রহণের আওতায় পড়েছে, চার বছর ধরে মেরামত বা সংস্কার না হওয়ায় সেগুলোর অবস্থা ভালো না। বর্তমানে ঘরগুলো মেরামত না করা গেলে বর্ষা মৌসুম কাটানো সম্ভব হবে না। অন্যদিকে ক্ষতিপূরণের টাকাও পাওয়া যাচ্ছে না। টাকা পেলে তাঁরা নতুন জায়গায় স্থায়ী হতে পারতেন। ঘরগুলো মেরামতের প্রয়োজন পড়ত না।

মঙ্গলবার (৪মার্চ )দুপুরে জমির মালিকদের সঙ্গে নিজ কার্যালয়ে বৈঠক করেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব। বৈঠকে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক মো. হাফিজ আহমেদ ও সার্ভেয়ার উপস্থিত ছিলেন।বৈঠকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ ও অধিগ্রহণের জায়গাসংক্রান্ত বিষয় আগামী এক মাসের মধ্যে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী ৭ এপ্রিল ওসমানী বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও ভুক্তভোগীদের নিয়ে চূড়ান্ত শুনানি হবে। সেই শুনানিতে অধিগ্রহণের বিষয়গুলো সমাধান হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন
ট্যাগসঃ

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

সিলেট বিমানবন্দরে প্রকল্পের ক্ষতিপূরণ পাননি জমির মালিকেরা।

আপডেট সময়ঃ ০৪:২০:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫

সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তাবেষ্টনী ও নিরাপত্তা টহল সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের জন্য ২০২০ সালের ডিসেম্বরে প্রায় ১৫১ একর জমি অধিগ্রহণ করতে নোটিশ দেয় কর্তৃপক্ষ। এরপর চার বছর পার হলেও এখনো ক্ষতিপূরণের টাকা বুঝে পাননি জমির মালিকেরা। অধিগ্রহণের নোটিশ জারি হওয়ায় জমি কেনাবেচা বা খাজনাও দিতে পারছেন না মালিকেরা। ক্ষতিপূরণ না পাওয়ায় তাঁরা নতুন ঠিকানায়ও যেতে পারছেন না।সদর উপজেলার বড়শালা মৌজার ধুপাগুল এলাকার রাজীব হোসেনের ১১ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু চার বছর ধরে আশ্বাস পেলেও এখনো ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি। তিনি বলেন, বর্ষায় পানি বাড়লে ঘরে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। অধিগ্রহণ হয়ে যাওয়ায় নতুন করে ঘর মেরামতও করতে পারছেন না। অধিগ্রহণের পর ঘরের ছবি ও ভিডিও নেওয়া হয়েছে। এখন নতুন করে মেরামত করলে মেরামতের টাকা বৃথা যাবে।

ক্ষতিপূরণের টাকার জন্য চার বছর ধরে সিলেট জেলা প্রশাসন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকার ধরনা দিয়েও কোনো সুরাহা পাননি বিমানবন্দর এলাকার আবদুল হাকিম (৪৮)। তিনি বলেন, তাঁরা ভুক্তভোগীরা একত্র হয়ে একাধিকবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়েছেন, বিভিন্ন কর্মসূচি করেছেন। কিন্তু কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছেন না। প্রশাসন শুধু সময় নিচ্ছে। একেকবার একেক ধরনের কথা বলছে। বিষয়টি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কাগজের জন্য আটকে আছে বলে জানাচ্ছে জেলা প্রশাসন। আবার বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে জেলা প্রশাসন বিষয়টি দেখছে।আবদুল হাকিম বলেন, অনেক ভুক্তভোগী আছেন, যাঁদের জমিগুলোই শেষসম্বল। কিন্তু চার বছরের বেশি সময় ধরে তাঁরা জমি নিয়ে কিছুই করতে পারছেন না। এতে অনেকের ঘরের জন্য ছেলেমেয়েদের বিয়েও দিতে পারছেন না।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তাবেষ্টনী ও নিরাপত্তা টহল সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের জন্য ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ১৫১ একর জায়গা অধিগ্রহণের জন্য নোটিশ জারি করে জেলা প্রশাসন। স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুমদখল আইন ২০১৭ (২০১৭ সালের ২১ নম্বর আইন)–এর ৪ ধারা অনুযায়ী এ নোটিশ জারি করা হয়। এ নোটিশ জারির প্রকল্প এলাকার কোনো জমি বেচাকেনা বন্ধ হয়ে যায়। ভুক্তভোগীদের কয়েকজন বলেন, সামনে বর্ষাকাল। তাঁদের মধ্যে যাঁদের ঘরবাড়িসহ জমি অধিগ্রহণের আওতায় পড়েছে, চার বছর ধরে মেরামত বা সংস্কার না হওয়ায় সেগুলোর অবস্থা ভালো না। বর্তমানে ঘরগুলো মেরামত না করা গেলে বর্ষা মৌসুম কাটানো সম্ভব হবে না। অন্যদিকে ক্ষতিপূরণের টাকাও পাওয়া যাচ্ছে না। টাকা পেলে তাঁরা নতুন জায়গায় স্থায়ী হতে পারতেন। ঘরগুলো মেরামতের প্রয়োজন পড়ত না।

মঙ্গলবার (৪মার্চ )দুপুরে জমির মালিকদের সঙ্গে নিজ কার্যালয়ে বৈঠক করেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব। বৈঠকে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক মো. হাফিজ আহমেদ ও সার্ভেয়ার উপস্থিত ছিলেন।বৈঠকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ ও অধিগ্রহণের জায়গাসংক্রান্ত বিষয় আগামী এক মাসের মধ্যে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী ৭ এপ্রিল ওসমানী বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও ভুক্তভোগীদের নিয়ে চূড়ান্ত শুনানি হবে। সেই শুনানিতে অধিগ্রহণের বিষয়গুলো সমাধান হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন