সুনামগঞ্জের শাল্লায় আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর ক্রমাগত বেড়েই চলছে নানান ধরনের অপরাধ প্রবনতা। এমনকি ইজারাকৃত বিল-নদীর মাছ জোরপূর্বক লুন্ঠন করে নিয়ে যাচ্ছে দূর্বৃত্তরা। হাজার হাজার মানুষ প্রকাশ্য দিবালোকে ঘোষণা দিয়ে মাছ ধরার বিভিন্ন সরঞ্জামাদির মাধ্যমে কয়েকটি বিল-নদীর কোটি কোটি টাকার মাছ হরিলুট করে নিয়ে যায়। প্রশাসন, স্থানীয় মানুষ, জনপ্রতিনিধি সরজমিনে গিয়ে এই লুটপাট থামাতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।স্থানীয় মানুষ ও বিলের ইজারাদার/পাহাড়াদার জানান, জলমহালের আশপাশের অন্তত বিভিন্ন উপজেলার বহু গ্রামের হাজার হাজার মানুষ আনন্দ-উল্লাস করে বিলের মাছ লুট করে নিয়ে গেছে। পুলিশকে জানিয়েও বিলের মাছ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। শাল্লায় এমন পরিস্থিতি বিগত দিনে দেখি নাই। আর এমন পরিবেশ হবে আমরা কল্পনাও করছিনা। শাল্লার সুন্দর-সুশৃঙ্খল পরিবেশ ধ্বংস করে দিয়েছে তারা। ধারনা করছেন এসবের পিছনে নিশ্চয়ই কোন অপশক্তি কাজ করতেছে।গত শনি ও রবিবার সকালে শাল্লা সদর বাহাড়া ইউনিয়নের যাত্রাপুর গ্রাম সংলগ্ন জোয়ারিয়া বিলের মাছ জোরপূর্বক ধরে নেয় ইয়ারাবাদ, কান্দিগাঁও, চব্বিশা, দামপুর, রঘুনাথপুর, যাত্রাপুর, কান্দখলা সহ আরো অনেক গ্রামের হাজারো মানুষ। এদের উপস্থিতি দেখে বিলের পাহাড়াদার ভয় পেয়ে প্রতিবাদ না করে খবর দেয় ইজারাদারদের।এবিষয়ে জোয়ারিয়া বিলের ইজারাদার যাত্রাপুর হিলিপ মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি হিমাদ্রী সরকার বলেন, আমি অনেক দিন যাবত পরিবারের অসুস্থতার জন্য সিলেট আছি। শুনেছি বিলের মাছ ও কাডা লুটপাট করছে। আমরা ৩০-৩৫ লাখ টাকা খরচ করে বিল সাজাইছি। সামনের বছর মাছ ধরার জন্য প্রস্তুতি নিছলাম। বিলের দায়িত্ব দেওয়া বাদল বাবুর কাছে। বিষয়টা উনি ভাল করে বলতে পারবেন।কাশীপুর লাইরা দীঘা গ্রুপ জলমহালের ইজারাদার উত্তর জারুলিয়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক প্রজেশ দাস বলেন, জীবনেও এই পরিবেশ দেখিনি। প্রতিবছর ৪৫ লাখ টাকা রাজস্ব দেই। তিন বছর অন্তর অন্তর মাছ ধরা হয়। আগামী বছর মাছ ধরার কথা থাকলেও এলাকার ১০-১৫ হাজার মানুষ দুই দিনে আমাদের জলমহালের কোটি টাকার বেশি মাছ লুটে নিয়ে গেছে। পুলিশকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে জানিয়েছি। শুনেছি আজ (বুধবার) আবারও নাকি মাছ ধরতে আসবে।শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, জোয়ারিয়া সহ অন্যান্য বিলে মাছ ধরার খবর পেয়ে পুলিশ, গন্যমান্য মানুষ, জনপ্রতিনিধি মিলে চেষ্টা করেছি প্রতিহত করার। এগুলো সামাজিকভাবে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। আমার কাছে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ আসেনি অভিযোগ আসলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিয়াস চন্দ্র দাস জানান, বিলের মাছ ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক প্রশাসনের লোকজন পাঠিয়েছি। তাদের সাধ্যনুযায়ী বিলের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে চেষ্টা করেছেন এবং আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে অবগত করেছি।
প্রধান সম্পাদকঃ আবুবকর সিদ্দিক সুমন। নির্বাহী সম্পাদকঃ রুবেল হাসনাইন। বার্তা সম্পাদকঃ রুমি বরুয়া।
গুলশান, ঢাকা-১২১৬, বাংলাদেশ। ইমেইলঃ admin@sylhet21.com,sylhet21.com@gmail.com মোবাইলঃ +1586 665 4225
© 2024 Sylhet21 All Rights Reserved. | Developed Success Life IT