১২:১৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

বিয়ানীবাজারের কমিউনিটি পুলিশিংয়ের অবস্থা লন্ডভন্ড: গঠন হচ্ছে নাগরিক কমিটি

স্টাফ রিপোর্টার:
  • আপডেট সময়ঃ ১০:০৯:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ২৮ বার পড়া হয়েছে।

অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের কার্যক্রমে জনগণের অংশীদারত্ব তৈরি করা ছিল কমিউনিটি পুলিশিংয়ের লক্ষ্য। অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করে শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ সমাজ ব্যবস্থার লক্ষ্যে ‘পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ’ এ স্লোগান নিয়ে যাত্রা শুরু হয় কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমের। তবে শুরু থেকেই পুলিশের এ সামাজিক উদ্যোগ পদে পদে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ে। কার্যক্রম শুরুর পর থেকেই বিয়ানীবাজারের কমিউনিটি পুলিশিংয়ে যুক্ত অনেকের বিরুদ্ধে অপরাধে সংশ্লিষ্টতার নানা অভিযোগ ওঠে। কমিউনিটি পুলিশিংয়ের যাবতীয় কর্মকাণ্ড অপরাধ প্রতিরোধ তথা অপরাধ যাতে ঘটতে না পারে সেই লক্ষ্যে পরিচালিত হয়ে থাকে।

বিয়ানীবাজারে অতি রাজনীতির কবলে পড়ে কমিউনিটি পুলিশিং। ক্ষমতাসীন দলের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা ওয়ার্ড পর্যায়েও স্থান পান। ফলে এখানে পুলিশের সামাজিক সামাজিক নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ হোঁচট খায়। কমিউনিটি পুলিশের অনেক সদস্য অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন। এলাকার অরাজনৈতিক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কমিটিতে রাখার কথা থাকলেও বিয়ানীবাজারে তা হয়নি।

সূত্র জানায়, কমিউনিটি পুলিশ থেকে ফলপ্রসূ কোন উদ্যোগ না মেলায় বর্তমান সরকার দেশব্যাপী নাগরিক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ ধারাবাহিকতায় বিয়ানীবাজারেও নাগরিক কমিটির উপজেলা ও পৌর কমিটি গঠনের কার্যক্রম চলছে। অতি গোপনে চলমান এই কার্যক্রমে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের একাধিক ইউনিট সম্ভাব্যদের তথ্য যাচাই-বাছাই করছে। এসব কমিটি নিয়েও স্থানীয়ভাবে রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছ।

সূত্র আরোও জানায়, কমিউনিটি পুলিশিং এখন প্রায় পুরোপুরি বন্ধ আছে। কমিউনিটি পুলিশের আগে যেসব কমিটি ছিল, সেগুলোর আর অস্তিত্ব নেই। এ ছাড়া ওই সব কমিটির প্রধান বা মূল ব্যক্তিদের নিয়েও আগে স্বেচ্ছাচারিতা বা পক্ষপাতের অনেক অভিযোগও ছিল। সবমিলে কমিউনিটি পুলিশিং নতুন করে আর সচল করা হয়নি। তবে বর্তমানে পুলিশের উদ্যোগে ‘নাগরিক কমিটি’ বা সিটিজেন ফোরাম নামে নতুন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

নাগরিক কমিটি সম্পর্কে বিয়ানীবাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সমেদ আলী বলেন, ‘এটি কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মতো নয়, নাগরিক কমিটির কাজ মূলত পুলিশকে পরামর্শ ও মতামত দিয়ে সহায়তা করা। সবেমাত্র কাজটি শুরু হয়েছে। নাগরিক কমিটি সংশ্লিষ্ট থানার আওতাধীন সমাজের গণমান্যদের নিয়ে গঠন করা হচ্ছে।

বিয়ানীবাজার আদর্শ মহিলা কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক সঞ্জয় আচার্য বলেন, ‘গ্রামীণ প্রেক্ষাপটে বর্তমানে জমিজমা দখল বা মালিকানা বিরোধ, কিশোর অপরাধ, চুরি, ছিনতাই, মাদকসহ নানা সামাজিক অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ পরিস্থিতিতে দ্রুত কমিউনিটি পুলিশিং অথবা এই বৈশিষ্ট্যের কোনো ব্যবস্থা চালু করতে হবে। জনগণকে সম্পৃক্ত করে পুলিশিং করা গেলে সমাজের অপরাধ অনেকাংশে কমে আসবে।’

 

নিউজটি শেয়ার করুন
ট্যাগসঃ

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বিয়ানীবাজারের কমিউনিটি পুলিশিংয়ের অবস্থা লন্ডভন্ড: গঠন হচ্ছে নাগরিক কমিটি

আপডেট সময়ঃ ১০:০৯:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪

অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের কার্যক্রমে জনগণের অংশীদারত্ব তৈরি করা ছিল কমিউনিটি পুলিশিংয়ের লক্ষ্য। অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করে শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ সমাজ ব্যবস্থার লক্ষ্যে ‘পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ’ এ স্লোগান নিয়ে যাত্রা শুরু হয় কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমের। তবে শুরু থেকেই পুলিশের এ সামাজিক উদ্যোগ পদে পদে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ে। কার্যক্রম শুরুর পর থেকেই বিয়ানীবাজারের কমিউনিটি পুলিশিংয়ে যুক্ত অনেকের বিরুদ্ধে অপরাধে সংশ্লিষ্টতার নানা অভিযোগ ওঠে। কমিউনিটি পুলিশিংয়ের যাবতীয় কর্মকাণ্ড অপরাধ প্রতিরোধ তথা অপরাধ যাতে ঘটতে না পারে সেই লক্ষ্যে পরিচালিত হয়ে থাকে।

বিয়ানীবাজারে অতি রাজনীতির কবলে পড়ে কমিউনিটি পুলিশিং। ক্ষমতাসীন দলের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা ওয়ার্ড পর্যায়েও স্থান পান। ফলে এখানে পুলিশের সামাজিক সামাজিক নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ হোঁচট খায়। কমিউনিটি পুলিশের অনেক সদস্য অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন। এলাকার অরাজনৈতিক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কমিটিতে রাখার কথা থাকলেও বিয়ানীবাজারে তা হয়নি।

সূত্র জানায়, কমিউনিটি পুলিশ থেকে ফলপ্রসূ কোন উদ্যোগ না মেলায় বর্তমান সরকার দেশব্যাপী নাগরিক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ ধারাবাহিকতায় বিয়ানীবাজারেও নাগরিক কমিটির উপজেলা ও পৌর কমিটি গঠনের কার্যক্রম চলছে। অতি গোপনে চলমান এই কার্যক্রমে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের একাধিক ইউনিট সম্ভাব্যদের তথ্য যাচাই-বাছাই করছে। এসব কমিটি নিয়েও স্থানীয়ভাবে রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছ।

সূত্র আরোও জানায়, কমিউনিটি পুলিশিং এখন প্রায় পুরোপুরি বন্ধ আছে। কমিউনিটি পুলিশের আগে যেসব কমিটি ছিল, সেগুলোর আর অস্তিত্ব নেই। এ ছাড়া ওই সব কমিটির প্রধান বা মূল ব্যক্তিদের নিয়েও আগে স্বেচ্ছাচারিতা বা পক্ষপাতের অনেক অভিযোগও ছিল। সবমিলে কমিউনিটি পুলিশিং নতুন করে আর সচল করা হয়নি। তবে বর্তমানে পুলিশের উদ্যোগে ‘নাগরিক কমিটি’ বা সিটিজেন ফোরাম নামে নতুন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

নাগরিক কমিটি সম্পর্কে বিয়ানীবাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সমেদ আলী বলেন, ‘এটি কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মতো নয়, নাগরিক কমিটির কাজ মূলত পুলিশকে পরামর্শ ও মতামত দিয়ে সহায়তা করা। সবেমাত্র কাজটি শুরু হয়েছে। নাগরিক কমিটি সংশ্লিষ্ট থানার আওতাধীন সমাজের গণমান্যদের নিয়ে গঠন করা হচ্ছে।

বিয়ানীবাজার আদর্শ মহিলা কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক সঞ্জয় আচার্য বলেন, ‘গ্রামীণ প্রেক্ষাপটে বর্তমানে জমিজমা দখল বা মালিকানা বিরোধ, কিশোর অপরাধ, চুরি, ছিনতাই, মাদকসহ নানা সামাজিক অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ পরিস্থিতিতে দ্রুত কমিউনিটি পুলিশিং অথবা এই বৈশিষ্ট্যের কোনো ব্যবস্থা চালু করতে হবে। জনগণকে সম্পৃক্ত করে পুলিশিং করা গেলে সমাজের অপরাধ অনেকাংশে কমে আসবে।’

 

নিউজটি শেয়ার করুন