বিয়ে হলো একটি সামাজিক বন্ধন। একে বৈধ চুক্তিও বলা যায়, যার মাধ্যমে দু’জনের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপিত হয়। দু’জন মানুষের মধ্যকার ভালোবাসার সম্পর্কই বিয়ের মাধ্যমে পরিণতি পায়। তবে বিয়ের সঠিক বয়স কত, তা হয়তো অনেকেরই অজানা।
যদিও বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, বিয়ের জন্য পুরুষের ২১ বছর ও নারীর বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর পূর্ণ হতে হবে। এর চেয়ে কম বয়সে বিয়ে করলে তা বৈধতা পাবে না ও বাল্যবিবাহ হিসেবে বিবেচিত হবে। যা আইনি জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নারী-পুরুষ প্রাপ্তবয়স্ক না হলে বিয়ে করা আইনত যেমন অপরাধ, ঠিক তেমনই কম বয়সে বিয়ে করলে তা দীর্ঘদিন টিকিয়ে রাখাও কষ্টকর। অল্প বয়সে বিয়ে করলে সংসারের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেকেই দাম্পত্য জীবনে সুখী হতে পারেন না। তবে দেরিতে বিয়ে করলেই মানুষ বেশি সুখী হন।
কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, বিয়ের আগে মানসিক স্বাস্থ্য, বয়স, শিক্ষার স্তর ও আর্থিক অবস্থাসহ বেশ কিছু বিষয়ের উপর নজর রাখা জরুরি। না হলে বিয়ে পরবর্তী সময়ে সংসারে নানা জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে। এর থেকে ডিভোর্স পর্যন্তও হতে পারে।
বিয়ে নিয়ে পরিচালিত বিভিন্ন গবেষণা ও সমীক্ষার তথ্য অনুসারে বিশেষজ্ঞদের মতামত হলো, ২৫-৩২ বছরের মধ্যেই নারী-পুরুষ উভয়ের বিয়ে সম্পন্ন করা উচিত। আলবার্টা ইউনিভার্সিটির বিশেষজ্ঞদের মতে, যারা দেরিতে বিয়ে করেন তাদের তুলনায় যারা কম বয়সে বিয়ে করেন তাদের মধ্যে হতাশাগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এ কারণে নির্দিষ্ট বয়সে বিয়ে করা গুরুত্বপূর্ণ।
সমাজবিজ্ঞানী ও মনোবিজ্ঞানীরা, বছরের পর বছর গবেষণা ও বিস্তৃত তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে জানিয়েছেন, ২০ বছর বা তার আগে যারা বিয়ে করেন তাদের মধ্যেই ডিভোর্সের ঘটনা বেশি ঘটে। এর পেছনে দায়ী হতে পারে, আর্থিক অস্বচ্ছলতা, পরিবারের চাপ, বোঝাপোড়ার অভাব, ক্যারিয়ার উন্নত না হওয়া ইত্যাদি।
গবেষণা বলছে, ৩২ বছরের পরে যারা বিয়ে করেন তারা আর্থিকভাবেও যেমন স্বচ্ছল হন তেমনই সাংসারিক জীবনেও সূখী হন। এমন দাম্পত্যে ব্যক্তিত্বের সংঘর্ষ, হতাশা ইত্যাদি কম ঘটে। এমনকি ২৫-৩২ বছরের মধ্যে যারা বিয়ে করেন তাদের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনাও কম ঘটে।
মনোবিজ্ঞানী মরগান পেকও দেরিতে বিয়ের পক্ষে। তিনি বলেন, ‘একজন ব্যক্তি পরিপক্ক অবস্থায় বিয়ে করলে সঠিকভাবে পরিবারের দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারেন। এমনকি সঙ্গীকে সময় দেওয়া থেকে শুরু করে দাম্পত্য বোঝাপোড়াও ভালো থাকে।
বিয়ের বেশ কিছু উপকারিতাও আছে। এ বিষয়ে ভারতের মাইন্ডট্রাইব.ইন এর প্রতিষ্ঠাতা ও ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ডক্টর প্রেরণা কোহলি জানান, বিয়ে নারীদেরকে মানসিকভাবে স্থিতিশীল করে ও পুরুষদের বিবেকবোধ বাড়ায়। ইউনিভার্সিটি অব উইন্ডসে প্রকাশিত এক গবেষণার তথ্য অনুসারে, বিয়ে নারী-পুরুষ উভয়ের মধ্যেই হতাশা ও নেশাগ্রস্ততার মতো মানসিক অসুস্থতার ঝুঁকিও কমায়।
প্রধান সম্পাদকঃ আবুবকর সিদ্দিক সুমন।
নির্বাহী সম্পাদকঃ রুবেল হাসনাইন।
বার্তা সম্পাদকঃ রুমি বরুয়া।
প্রধান কার্যালয়ঃ গুলশান, ঢাকা-১২১৬, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +1586 665 4225 ই-মেইলঃ admin@sylhet21.com,sylhet21@gmail.com
©2024 sylhet21.com | Developed By successlifeit.com