আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে দেশে আসতে পারেননি বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জের অনেক প্রবাসী বিএনপি নেতা। কোনো কারণে একবার কেউ দেশে এলে মামলা, হামলা ও গ্রেপ্তারের মুখে পড়তেন তারা। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর প্রবাসী সেই নেতারা দেশে ফিরতে শুরু করেছেন।
বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জে প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো নেতা বাড়ি ফিরছেন। প্রবাসী নেতারা আসতে শুরু করায় চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের মধ্যে অনেকটা নির্বাচনী আমেজ তৈরি হয়েছে। দেশে থাকা অবস্থায় তারা স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা করছেন, মতবিনিময় সভায় মিলিত হচ্ছেন কেউ -কেউ।
গত কয়েকমাসের ব্যবধানে যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সভাপতি শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুস, বিএনপির চেয়ারপারসনের ফরেন অ্যাডভাইজারি কমিটির সিনিয়র সদস্য, টাওয়ার হ্যামলেটস এর সাবেক ডেপুটি মেয়র আ ম ওহিদ আহমদ, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সদস্য জিল্লুর রহমান জিল্লু, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন, সাবেক ছাত্রদল নেতা ফাহিম শাকিল অপুসহ অন্তত: ডজনখানেক নেতা দেশে ফিরেছেন। এসব নেতার অনেকে আবার যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। একাধিক সূত্র জানায়, নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আকাঙ্খায় যেসব বিএনপি নেতা বাংলাদেশে ছুটে গেছেন তাদের বেশির ভাগই লন্ডন-আমেরিকার নাগরিক। বাংলাদেশের আইনে অন্য দেশের নাগরিকত্ব আছে এমন কেউ প্রার্থী হতে পারবেন না। তবে এসব নেতারা বলছেন, মনোনয়ন পেলে নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে রাজি আছেন।
ওয়ান-ইলিভেনের সরকারের আমল থেকে বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত জীবন যাপন করেছেন। সেখান থেকেই তিনি দীর্ঘ দেড় যুগ থেকে পরিচালনা করেছেন দেশের সবচেয়ে বৃহত্তম দল বিএনপি। তার খুব কাছের লোক হিসেবে পরিচিত শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুস বাড়ি এসে আবার ফিরে গেছেন। বিগত দিনে শেখ হাসিনার বিদেশ সফর করার সময় যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্র থেকে শতশত বিএনপি নেতাকর্মীরা হাসিনার অবস্থানস্থল ঘেরাও করে রাখতেন। হাসিনা বিরোধী ব্যাপক আন্দোলোন হত যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। আর এতে বিয়ানীবাজারসহ প্রবাসী বাংলাদেশীদের সরব উপস্থিতি থাকত চোখে পড়ার মত।
হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে শরীক নেতাকর্মীরা গেল প্রায় ১৬ বছর থেকে তারা দেশে আসতে পারেননি। দীর্ঘ এই সময়ে অসংখ্য নেতাকর্মী দেশে থাকা তাদের পরিবার-পরিজন হারিয়েছেন। জন্মদাতা মা-বাবার শেষ বিদায়ের সময়ও বিদায় জানাতে পারেননি অনেকে। শুধু ফেসবুকে তাঁদের আহাঝারির স্ট্যাটাস দেখা যেত। দেশে আসলেই গ্রেফতার এবং মামলা দিয়ে হয়রানি করা হত। এমনকি বিদেশে অবস্থানকালেও দেশে মামলা দিয়ে আসামি করা হত। হয়রানি করা হত দেশে থাকা পরিবারের উপরও।
দেশে অবস্থানকালে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সদস্য জিল্লুর রহমান জিল্লু বলেন, আমাকে ১৬টি বছর দৌড়ের ওপর রেখেছিল আওয়ামী লীগ। আমার স্বজনদের নানাভাবে হয়রানি করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা এমন দেশ চাই, যে দেশে সবাই বাস করবে নিরাপদে, শান্তিপূর্ণভাবে। অথচ আওয়ামী দেশে একনায়কতন্ত্র শুরু করেছিল।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, নতুন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে, তা ধরে রাখতে পরবর্তী করণীয় এবং দলকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে এবং মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীকে উজ্জীবিত করতে দেশে ফিরে এসেছি।
বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট আহমদ রেজা ও সাধারণ সম্পাদক ছরওয়ার হোসেন অভিন্ন সুরে বলেন, প্রবাসী নেতৃবৃন্দ দীর্ঘদিন পর দেশে ফিরছেন। তাদের দেশে আসা-যাওয়ায় দলের নেতাকর্মীরা চাঙ্গা হচ্ছে। রাজনীতিতে তাদের সম্পৃক্ততা আরোও বাড়লে দল শক্তিশালী হবে।
প্রধান সম্পাদকঃ আবুবকর সিদ্দিক সুমন। নির্বাহী সম্পাদকঃ রুবেল হাসনাইন। বার্তা সম্পাদকঃ রুমি বরুয়া।
গুলশান, ঢাকা-১২১৬, বাংলাদেশ। ইমেইলঃ admin@sylhet21.com,sylhet21.com@gmail.com মোবাইলঃ +1586 665 4225
© 2024 Sylhet21 All Rights Reserved. | Developed Success Life IT