০১:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫

ইফতারে প্রধান অতিথিকে বরণ করা নিয়ে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১

রাজশাহী প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময়ঃ ০৮:২২:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫
  • / ৭ বার পড়া হয়েছে।

রাজশাহীর তানোরে বিএনপির ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথিকে বরণ করা নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত জানেউল (৫০) মারা গেছেন। রামেক হাসপাতালে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় বুধবার বিকাল পৌনে ৪টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

ওই সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের অনন্ত ৪ জন আহত হয়েছেন। আহত বিএনপির নেতাকর্মীরা বিভিন্নভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তানোর থানার ওসি আফজাল হোসেন।

এ ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মরহুম ব্যারিস্টার আমিনুল হকের ছোট ভাই রাজশাহী-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মেজর জেনারেল (অব.) শরিফ উদ্দিন।

মঙ্গলবার বিকালে উপজেলার পাঁচন্দর ইউপির কৃঞ্চপুর মোড়ে সংঘর্ষের এ ঘটনা বলে জানিয়েছেন সাবেক ছাত্রনেতা এমএ মালেক।

ওই সংঘর্ষে আহত হয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান ও অত্র ইউনিয়ন বিএনপির একাংশের সভাপতি মমিনুল হক মমিন। নিহত জানেউল বিএনপি কর্মী চেয়ারম্যান মমিনের আপন ভাই। বাড়ি উপজেলার পাঁচন্দর ইউপির কৈচা মাহানপুর গ্রামে।

অন্য গ্রুপের ইউনিয়ন বিএনপির আরেক সভাপতি প্রভাষক মজিবুর রহমান ও উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক গোলাম মুর্তজা। পরে থানা পুলিশ ও সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিবেশ শান্ত হলে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

চেয়ারম্যান মমিনুল হকের অনুসারী সাবেক ছাত্রদলের সভাপতি এমএ মালেক জানান, সরকার ও দলীয় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা মজিবুর প্রভাব খাটিয়ে একাই সবকিছু নিয়ে নেয়। কিন্তু মমিনকে কোন পাত্তাই দেয় প্রভাষক মজিবর রহমান। মমিন গ্রুপের লোকজন কৃঞ্চপুর আদর্শ মহিলা কলেজে ইফতারে উপস্থিত হওয়ার জন্য কৃষ্ণপুর মোড়ে প্রধান অতিথিকে বরণ করে মঞ্চে নিয়ে যেতে চান মমিন গ্রুপের নেতাকর্মীরা। এ সময় মজিবুর রহমান ও তার সাঙ্গোপাঙ্গ নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এতেই গুরুতর আহত হন সাবেক চেয়ারম্যান মমিন ও তার ভাই জানেউল।

সংঘর্ষে ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক আতঙ্ক। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মমিন গ্রুপের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক বলে আক্ষেপ করেন এই নেতা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার কৃঞ্চপুর মোড়ে আশামাত্রই কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই মারপিট শুরু হয়। মোড়ে যখন মারপিট চলছে তখন ইফতারের মঞ্চে উপজেলার শীর্ষ নেতারা বসে ছিলেন। বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মতিনের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে প্রভাষক মুজিবর রহমান অতীতে সব ধরনের সরকারি সুবিধা ভোগ করেছেন বলে নেতাকর্মীদের দাবি। মূলত এমন ধারণা থেকে উভয় গ্রুপের মধ্যে এক প্রকার উত্তেজনা বিরাজ করছিল। তারই ধারাবাহিকতায় সংঘর্ষ ধাওয়া পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

এ নিয়ে ওই ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রভাষক মজিবুর রহমানের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও রিসিভ হয়নি। ওই ইউনিয়ন বিএনপির একাংশের আরেক সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান মমিনুল হক মমিনের মোবাইলেও ফোন দেওয়া হলে তিনিও রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে তানোর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আখেরুজ্জামান হান্নান বলেন, কৃষ্ণপুর মহিলা কলেজ মাঠে ইফতারের স্থান ছিল। প্রধান অতিথি মেজর জেনারেল (অব.) শরিফ উদ্দিনকে কৃঞ্চপুর মোড় থেকে স্লোগান দিয়ে ইফতারের মঞ্চে নিয়ে যেতে চায় মমিনের লোকজন; কিন্তু প্রভাষক মজিবুর বাধা দেয়। এটা নিয়েই মারপিট হয়। এখন পরিবেশ শান্ত আছে। নিহতের লাশ দাফনের পর উভয়পক্ষকে নিয়ে বসে ঘটনা মীমাংসা করা হবে।

তানোর থানার ওসি আফজাল হোসেন বলেন, বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে একজন রামেক হাসপাতালে মারা গেছেন। ঘটনার দিন পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এখন পরিবেশ শান্ত আছে। তবে কোনো পক্ষই অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন
ট্যাগসঃ

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ইফতারে প্রধান অতিথিকে বরণ করা নিয়ে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১

আপডেট সময়ঃ ০৮:২২:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫

রাজশাহীর তানোরে বিএনপির ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথিকে বরণ করা নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত জানেউল (৫০) মারা গেছেন। রামেক হাসপাতালে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় বুধবার বিকাল পৌনে ৪টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

ওই সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের অনন্ত ৪ জন আহত হয়েছেন। আহত বিএনপির নেতাকর্মীরা বিভিন্নভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তানোর থানার ওসি আফজাল হোসেন।

এ ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মরহুম ব্যারিস্টার আমিনুল হকের ছোট ভাই রাজশাহী-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মেজর জেনারেল (অব.) শরিফ উদ্দিন।

মঙ্গলবার বিকালে উপজেলার পাঁচন্দর ইউপির কৃঞ্চপুর মোড়ে সংঘর্ষের এ ঘটনা বলে জানিয়েছেন সাবেক ছাত্রনেতা এমএ মালেক।

ওই সংঘর্ষে আহত হয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান ও অত্র ইউনিয়ন বিএনপির একাংশের সভাপতি মমিনুল হক মমিন। নিহত জানেউল বিএনপি কর্মী চেয়ারম্যান মমিনের আপন ভাই। বাড়ি উপজেলার পাঁচন্দর ইউপির কৈচা মাহানপুর গ্রামে।

অন্য গ্রুপের ইউনিয়ন বিএনপির আরেক সভাপতি প্রভাষক মজিবুর রহমান ও উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক গোলাম মুর্তজা। পরে থানা পুলিশ ও সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিবেশ শান্ত হলে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

চেয়ারম্যান মমিনুল হকের অনুসারী সাবেক ছাত্রদলের সভাপতি এমএ মালেক জানান, সরকার ও দলীয় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা মজিবুর প্রভাব খাটিয়ে একাই সবকিছু নিয়ে নেয়। কিন্তু মমিনকে কোন পাত্তাই দেয় প্রভাষক মজিবর রহমান। মমিন গ্রুপের লোকজন কৃঞ্চপুর আদর্শ মহিলা কলেজে ইফতারে উপস্থিত হওয়ার জন্য কৃষ্ণপুর মোড়ে প্রধান অতিথিকে বরণ করে মঞ্চে নিয়ে যেতে চান মমিন গ্রুপের নেতাকর্মীরা। এ সময় মজিবুর রহমান ও তার সাঙ্গোপাঙ্গ নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এতেই গুরুতর আহত হন সাবেক চেয়ারম্যান মমিন ও তার ভাই জানেউল।

সংঘর্ষে ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক আতঙ্ক। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মমিন গ্রুপের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক বলে আক্ষেপ করেন এই নেতা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার কৃঞ্চপুর মোড়ে আশামাত্রই কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই মারপিট শুরু হয়। মোড়ে যখন মারপিট চলছে তখন ইফতারের মঞ্চে উপজেলার শীর্ষ নেতারা বসে ছিলেন। বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মতিনের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে প্রভাষক মুজিবর রহমান অতীতে সব ধরনের সরকারি সুবিধা ভোগ করেছেন বলে নেতাকর্মীদের দাবি। মূলত এমন ধারণা থেকে উভয় গ্রুপের মধ্যে এক প্রকার উত্তেজনা বিরাজ করছিল। তারই ধারাবাহিকতায় সংঘর্ষ ধাওয়া পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

এ নিয়ে ওই ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রভাষক মজিবুর রহমানের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও রিসিভ হয়নি। ওই ইউনিয়ন বিএনপির একাংশের আরেক সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান মমিনুল হক মমিনের মোবাইলেও ফোন দেওয়া হলে তিনিও রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে তানোর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আখেরুজ্জামান হান্নান বলেন, কৃষ্ণপুর মহিলা কলেজ মাঠে ইফতারের স্থান ছিল। প্রধান অতিথি মেজর জেনারেল (অব.) শরিফ উদ্দিনকে কৃঞ্চপুর মোড় থেকে স্লোগান দিয়ে ইফতারের মঞ্চে নিয়ে যেতে চায় মমিনের লোকজন; কিন্তু প্রভাষক মজিবুর বাধা দেয়। এটা নিয়েই মারপিট হয়। এখন পরিবেশ শান্ত আছে। নিহতের লাশ দাফনের পর উভয়পক্ষকে নিয়ে বসে ঘটনা মীমাংসা করা হবে।

তানোর থানার ওসি আফজাল হোসেন বলেন, বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে একজন রামেক হাসপাতালে মারা গেছেন। ঘটনার দিন পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এখন পরিবেশ শান্ত আছে। তবে কোনো পক্ষই অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন