শাবিতে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে অবস্থান কর্মসূচি

- আপডেট সময়ঃ ০৬:৩১:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ২২ বার পড়া হয়েছে।

শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে এনে জড়িতদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল পালিত হয়েছে।
রোববার সকাল এগারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন পেট্রোলিয়াম ও খনিজ প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
অবস্থান কর্মসূচিতে আবেদনের যোগ্যতা পূরণ না করেই জ্বালানি ও খনিজ প্রকৌশল বিভাগে তাজবিউল ইসলাম নামে এক প্রভাষক নিয়োগের অভিযোগ এনে তার নিয়োগ বাতিল ও নিয়োগে জড়িতদের বিচারের দাবি জানান বক্তারা।
এসময় বিভাগটির শিক্ষার্থী আলীমুজ্জামান শাফিন বলেন, “যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে নূন্যতম যোগ্যতা প্রয়োজন ৩.৫০, সেখানে এ শিক্ষকের সিজিপিএ ৩.২০। অথচ ওই সময় শিক্ষক নিয়োগে আমাদের বিভাগের এরচেয়ে ভালো সিজিপিও ধারী প্রার্থী ছিল। প্রশাসন কারণ হিসেবে দেখাইছে সেই ছেলে বেশি যোগ্য। যে নূন্যতম আবেদনের যোগ্যতাই রাখে না, সে আমাদের বিভাগের প্রভাষক। এ অনিয়মের সাথে যারা জড়িত তাদেরকে আমরা কোনভাবেই ছাড় দিব না এবং এ অবৈধ নিয়োগ বাতিল করতেই হবে।”
“আমরা কি এতই ছোট? যে এরকম অবৈধ নিয়োগে মাথানত করব! প্রশাসন যদি আমাদের দাবি মেনে না নেয়, তাহলে আমরা শিক্ষার্থীরা বিভাগে তালা দিতে বাধ্য হব।”
কর্মসূচিতে বিভাগের শিক্ষার্থী আবু বকর সিদ্দিক বলেন, “এ নিয়োগে এ পরিমাণ দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়েছে, তা আর প্রশ্ন করার বাকি রাখে না। আমরা যদি আজ অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত তাজবিউলকে বিভাগে প্রবেশের সুযোগ করে দেই, তাহলে আগামীতে এরকম অসংখ্য তাজবিউলেন জন্ম হবে। এরকম তাজবিউলরা কোন ধরণের শিক্ষা প্রদান করবে, কোন ধরণের শিক্ষার্থী তৈরি করবে, তা আমাদের বুঝা হয়ে গেছে।”
“আমাদের দাবি হচ্ছে, এ বিষয়ে একটা তদন্ত গঠন করা হয়েছিল, এখনো কেন সে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয় নাই? এটি অতিসত্তর প্রকাশ করতে হবে। এ অযোগ্য তাজবিউল যেন ক্যাম্পাসে ঢুকতে না , তা আমাদেরকেই সুনিশ্চিত করতে হবে।”
এসময় আর বক্তব্য রাখেন জ্বালানি ও খনিজ প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী সাইদুল ইসলাম, সৈয়দ মো. আসিফ আবরার, মুহয়ী শারদ, সুস্মিতা ছাফা, জামাদুজ্জাম সানি প্রমুখ।
এছাড়া অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের ‘তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ কর, নইলে ডিপার্টমেন্ট বন্ধ কর; শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম , মানি না- মানব না; যোগ্যরা শিক্ষক হবে, দুর্নীতিবাজরা পিছু হটবে; আবেদন করার যোগ্যতা নাই, নিয়োগ পায় কিভাবে; তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশে দেরি কেন? প্রশাসন জবাব দাও; যোগ্যতার কদর চাই, অনিয়মের বিচার চাই; শিক্ষক হবে নৈতিক, অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত নয়; অবিলম্বে এ নিয়োগ বাতিল করতে হবে ইত্যাদি লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
অবস্থান কর্মসূচি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভবনের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা।
এসময় ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে/দুর্নীতি/অনিয়মের/স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘ঘুষ না যোগ্যতা, যোগ্যতা-যোগ্যতা’, ‘গোল টেবিল না সংগ্রাম, সংগ্রাম-সংগ্রাম’, ‘দুর্নীতিবাজ শিক্ষক, মানি না-মানব না’, ‘জুলাইয়ের/ ২৪এর বাংলাদেশে, অন্যায়ের জায়গা নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা।
জ্বালানি ও খনিজ প্রকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা বিভাগের শিক্ষকরা নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকের সকল তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করেছি। এতে দেখা যাচ্ছে যে, ৩.৫০ গড় সিজিপিএ এর শর্ত পূরণ করা হয়নি। শিক্ষার্থীরা যে দাবি তুলেছে, সেই দাবি নিয়ে বিভাগের শিক্ষকরা তাদের সঙ্গে পুরোপরি একমত।”