০৪:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বিয়ানীবাজারের গ্রামে-গ্রামে রঙিন সাজে সাজানো পাঠশালা

স্টাফ রিপোর্টার:
  • আপডেট সময়ঃ ০৪:০৩:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ২২ বার পড়া হয়েছে।

বিয়ানীবাজারের প্রত্যন্ত গ্রামের পাঠশালা সাজানো হয়েছে রঙিন সাজে। দেয়ালে চোখ জুড়ানো অঙ্কন। সবকিছু পরিপাটি, সাজানো-গোছানো। মীনা-রাজুর হাস্যোজ্জ্বল কার্টুন ছবি। দেয়ালে আঁকা হয়েছে জাতীয় মাছ, পশু, ফল, পতাকা ও দৃষ্টিনন্দন বাহারি ছবি। শিক্ষার্থীদের নিয়ে আঁকা দৃষ্টিনন্দন চিত্রকর্ম। এসব দৃশ্য বিয়ানীবাজার উপজেলার শতাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিরাজমান।

এমন পাঠশালা পেয়ে বিয়ানীবাজারের শিশু শিক্ষার্থীরা আনন্দিত, অভিভাবকরাও বিমোহিত। অনেক বিদ্যালয়ে এখনও চলছে রঙের কাজ।

বিয়ানীবাজার পৌরশহরের খাসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হাফসা আক্তার বলেন, ‘বিদ্যালয়ের পরিবেশটা রঙিন ও শিশুবান্ধব করে তোলা উচিত। পরিবেশের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত শিক্ষাই প্রকৃত শিক্ষা।’ তিলপাড়ার চান্দলা-আলীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কবির হোসেন বলেন, রঙ্গিন দেয়াল, নানা চিত্রকর্ম কোমলমতি শিশুদের আকৃষ্ট করছে। শিশুরা ছবি দেখে নানাকিছু শিখতেও পারে।

নবাং-সূঁতারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র হোসনে আরা বলে, ‘আগেও স্কুলে ভালো লাগতো। তবে এখন বেশি ভালো লাগে। আগে স্কুলে বিশেষ কোনও রঙ ছিল না। এখন স্কুলে গিয়ে যেদিকে তাকাই সেদিকেই রঙ্গিন দেখতে পাই।’ একই স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী হাসান বলে, ‘এখন আমাদের পাঠশালা রঙিন।’

সরজমিন দেখা যায়, অনেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক শিশু শিক্ষার্থীদের জন্য খেলাধুলার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো সেজেছে নান্দনিক ছোঁয়ায়। যেখানে ঠাঁই পেয়েছে স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জন বর্ণ, জাতীয় বীরশ্রেষ্ঠরা, ছন্দ, শিক্ষণীয় নানা চিত্র ও মজার মজার বিষয়। এতে শিক্ষার্থীরা উৎসাহ নিয়ে পাঠশালায় আসছে। এছাড়াও বাংলা স্বরবর্ণ, ব্যাঞ্জনবর্ণ, ইংরেজি বড় ও ছোট হাতের অক্ষর, অক্ষর দিয়ে পশু-পাখি, একতারা, ঈগল, হাতি, ওল, ইট, ঐরাবত, ওষুধ, শহীদ মিনার, গ্রামীণ চিত্রসহ আমাদের স্কুল আনন্দের এক রঙিন ফুল, স্বপ্ন দেখতে শেখো কারণ স্বপ্ন না দেখলে তুমি কথনোই সফল হতে পারবে না, আমরা প্রতিদিন স্কুলে যাই, কেন আপনার সন্তানকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করবেন, আছে সাত দিনের নাম, বর্ষাকাল, বিকেল, উপদেশ ও নীতিকথা। ১ম থেকে ৫ম শ্রেণির অনেক শিক্ষার্থী জানায়, এসব ছবি ও লেখা আমাদের ভালো লাগে। আমরা আগ্রহ নিয়ে স্কুলে আসি এবং এসব দেখে আমাদের বড় হওয়ার ইচ্ছে করে।

খাসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গড়ে তোলা হয়েছে মানবিক আঙ্গিনা নামের ব্যতিক্রমী কর্মশৈলী। মানবিক কাজে শিশুদের উদ্বুদ্ধ করতে এমন প্রয়াস গ্রহণ করা হয়েছে।

বিয়ানীবাজার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নৃপেন্দ্র নাথ দাস বলেন, উপজেলায় মোট ১৫০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। প্রতিবছর বিদ্যালয় উন্নয়ন ও সংস্কারের জন্য কিছু বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ বরাদ্দের বাইরেও এলাকার সুধীজনের আর্থিক সহায়তায় বিদ্যালয়গুলো রাঙানো হচ্ছে। তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি, শিক্ষকরসহ সবার সহযোগিতায় স্কুলে স্কুলে এসব করা সম্ভব হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন
ট্যাগসঃ

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বিয়ানীবাজারের গ্রামে-গ্রামে রঙিন সাজে সাজানো পাঠশালা

আপডেট সময়ঃ ০৪:০৩:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫

বিয়ানীবাজারের প্রত্যন্ত গ্রামের পাঠশালা সাজানো হয়েছে রঙিন সাজে। দেয়ালে চোখ জুড়ানো অঙ্কন। সবকিছু পরিপাটি, সাজানো-গোছানো। মীনা-রাজুর হাস্যোজ্জ্বল কার্টুন ছবি। দেয়ালে আঁকা হয়েছে জাতীয় মাছ, পশু, ফল, পতাকা ও দৃষ্টিনন্দন বাহারি ছবি। শিক্ষার্থীদের নিয়ে আঁকা দৃষ্টিনন্দন চিত্রকর্ম। এসব দৃশ্য বিয়ানীবাজার উপজেলার শতাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিরাজমান।

এমন পাঠশালা পেয়ে বিয়ানীবাজারের শিশু শিক্ষার্থীরা আনন্দিত, অভিভাবকরাও বিমোহিত। অনেক বিদ্যালয়ে এখনও চলছে রঙের কাজ।

বিয়ানীবাজার পৌরশহরের খাসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হাফসা আক্তার বলেন, ‘বিদ্যালয়ের পরিবেশটা রঙিন ও শিশুবান্ধব করে তোলা উচিত। পরিবেশের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত শিক্ষাই প্রকৃত শিক্ষা।’ তিলপাড়ার চান্দলা-আলীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কবির হোসেন বলেন, রঙ্গিন দেয়াল, নানা চিত্রকর্ম কোমলমতি শিশুদের আকৃষ্ট করছে। শিশুরা ছবি দেখে নানাকিছু শিখতেও পারে।

নবাং-সূঁতারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র হোসনে আরা বলে, ‘আগেও স্কুলে ভালো লাগতো। তবে এখন বেশি ভালো লাগে। আগে স্কুলে বিশেষ কোনও রঙ ছিল না। এখন স্কুলে গিয়ে যেদিকে তাকাই সেদিকেই রঙ্গিন দেখতে পাই।’ একই স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী হাসান বলে, ‘এখন আমাদের পাঠশালা রঙিন।’

সরজমিন দেখা যায়, অনেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক শিশু শিক্ষার্থীদের জন্য খেলাধুলার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো সেজেছে নান্দনিক ছোঁয়ায়। যেখানে ঠাঁই পেয়েছে স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জন বর্ণ, জাতীয় বীরশ্রেষ্ঠরা, ছন্দ, শিক্ষণীয় নানা চিত্র ও মজার মজার বিষয়। এতে শিক্ষার্থীরা উৎসাহ নিয়ে পাঠশালায় আসছে। এছাড়াও বাংলা স্বরবর্ণ, ব্যাঞ্জনবর্ণ, ইংরেজি বড় ও ছোট হাতের অক্ষর, অক্ষর দিয়ে পশু-পাখি, একতারা, ঈগল, হাতি, ওল, ইট, ঐরাবত, ওষুধ, শহীদ মিনার, গ্রামীণ চিত্রসহ আমাদের স্কুল আনন্দের এক রঙিন ফুল, স্বপ্ন দেখতে শেখো কারণ স্বপ্ন না দেখলে তুমি কথনোই সফল হতে পারবে না, আমরা প্রতিদিন স্কুলে যাই, কেন আপনার সন্তানকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করবেন, আছে সাত দিনের নাম, বর্ষাকাল, বিকেল, উপদেশ ও নীতিকথা। ১ম থেকে ৫ম শ্রেণির অনেক শিক্ষার্থী জানায়, এসব ছবি ও লেখা আমাদের ভালো লাগে। আমরা আগ্রহ নিয়ে স্কুলে আসি এবং এসব দেখে আমাদের বড় হওয়ার ইচ্ছে করে।

খাসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গড়ে তোলা হয়েছে মানবিক আঙ্গিনা নামের ব্যতিক্রমী কর্মশৈলী। মানবিক কাজে শিশুদের উদ্বুদ্ধ করতে এমন প্রয়াস গ্রহণ করা হয়েছে।

বিয়ানীবাজার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নৃপেন্দ্র নাথ দাস বলেন, উপজেলায় মোট ১৫০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। প্রতিবছর বিদ্যালয় উন্নয়ন ও সংস্কারের জন্য কিছু বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ বরাদ্দের বাইরেও এলাকার সুধীজনের আর্থিক সহায়তায় বিদ্যালয়গুলো রাঙানো হচ্ছে। তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি, শিক্ষকরসহ সবার সহযোগিতায় স্কুলে স্কুলে এসব করা সম্ভব হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন